পাকিস্তানের রক্ষণশীল উত্তর পশ্চিম শহরে উগ্র ইসলাম- পন্থী দলের নেতৃত্বে একদল উন্মত্ত জনতা উল্লাসে আগুন ধরিয়ে দিল হিন্দুদের একটি মন্দিরে।
খাইবার পাখতুনওয়ার কারাক জেলায় বুধবার ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় পাকিস্তানের মানবাধিকার কর্মীরা নিন্দায় সােচ্চার হয়েছেন। এমনকী পাকিস্তানের মানবধিকার মন্ত্রী শিরিন মাজারিও ঘটনার তীব্র নিন্দা করে পুলিশ প্রশাসনকে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছেন।
জেলা পুলিশের অফিসার ইরফান মাওয়াট এদিন জানান কারাক জেলার টেরি গ্রামে বুধবার হিন্দুদের একটি মন্দির ভেঙে দেওয়া হয়েছে। মন্দির ভাঙার খবর প্রকাশ্যে আসতেই পাকিস্তানের মানবাধিকার মন্ত্রী টুইটে করে এই ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছেন।
Today in Pakistan.
— Geeta Mohan گیتا موہن गीता मोहन (@Geeta_Mohan) December 30, 2020
A charged mob destroyed a Hindu temple by setting it on fire and razing it to the ground in Khyber Pakhtunkhwa district of Karak.
The incident took place after a JUI-F rally was held nearby where speakers delivered fiery speeches. #NayaPakistan #Pakistan pic.twitter.com/9iX2K3ipux
জেলা পুলিশের প্রধান ইরফান উল্লার দাবি মন্দিরে হামলার সঙ্গে জড়িতদের অনেককেই ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানান উগ্র ইসলামিক গােষ্ঠী জমিয়ত উলেমায়ে ইসলাম পার্টির স্থানীয় কিছু নেতার উপস্থিতিতে মন্দিরে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অভিযােগ স্থানীয় হিন্দুরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই মন্দির সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছিল। কিন্তু জমিয়তে নেতাদের তা পছন্দ হয়নি। তাই তাদের উস্কানিতে মন্দিরে চড়াও হয় কয়েকশো ধর্মীয় উন্মাদ।
মুহূর্তের মধ্যে মন্দির গুড়িয়ে সেটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আরও একটি সূত্রে অভিযােগ ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই উলেমায়ে ইসলামের একটি র্যালি ছিল ওই এলাকায়। সেই পদযাত্রা থেকে উস্কানি মূলক বক্তব্য দেয় বক্তারা তাতেই প্ররােচিত হয়ে স্থানীয় কয়েকশাে ধর্মীয় উন্মাদ মন্দিরে চড়াও হয়।
মন্দির ভাঙার জেরে এলাকায় প্রবল উত্তেজনা সৃষ্টি হলে ব্যাপক পুলিশ মােতায়েন করে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। যদিও অভিযুক্ত সংগঠনের আমির মওলানা আতাউর রহমান অভিযােগ উড়িয়ে দিয়ে দাবী করেন ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনও যােগসূত্র নেই।
কয়েক সপ্তাহ আগে ইমরান খানের সরকার পাকিস্তানের সংখ্যালঘু হিন্দুদের উদ্দেশ্যে জানায় পুরনাে মন্দিরের সংস্কার বা নির্মাণে কোনও বাধা নেই। স্থানীয় হিন্দুরা সরকারের সেই ছাড়পত্র পেয়েই মন্দিরটির সংস্কারে উৎসাহী হয়েছিলেন। এটি উগ্র মৌলবাদীদের সহ্য হয়নি।পাকিস্তানে এমন ঘটনা এই প্রথম নয়।
পাকিস্তানে বিগত বছরগুলিতে সংখ্যালঘুদের একাধিক মন্দিরে হামলা হয়েছে। সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় স্থানে ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের হামলার ঘটনা না ঘটে তা দেখারও আশ্বাস দেন সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি মন্দির গুলিতে পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.