‘অমিত আশ্বাসে’ শান্ত শান্তনু ঠাকুর ওড়ালেন তৃণমূলে যােগের সম্ভাবনা। - Probaho Bangla

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০

‘অমিত আশ্বাসে’ শান্ত শান্তনু ঠাকুর ওড়ালেন তৃণমূলে যােগের সম্ভাবনা।

নাগরিকত্ব আইন লাণ্ড নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতেই বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে শুরু হয়েছিল জল্পনা।

In Amit assurance Shantanu Thakur stop to raised the possibility of tmc joining, Shantanu Thakur

তাকে ডেকে বৈঠকও করেছিলেন। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘােষ। এবার সিএএ (CAA) নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের আশ্বাসে আশ্বস্ত হলেন শান্তনু। পরিস্কার জানিয়ে দিলেন সিএএ বিরােধীদের সঙ্গে হাত মেলানাের কোনও প্রশ্নই নেই। 


যার পরেই মতুয়া ভােটের চিন্তায় জেরবার বিজেপি কিছুটা স্বস্তি পেল। উল্লেখ্য, সংশােধিত নাগরিকত্ব আইন (CAA) কার্যকর করা নিয়ে বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিলেন শান্তনু ঠাকুর।

অবশেষে তাঁর দাবি মেনে মতুয়া সমাজের সামনে CAA নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করা হবে বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের আশ্বাস পাওয়ার পরেই শান্তনু শান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

তাঁর তৃণমূলে যাওয়া নিয়ে যাবতীয় জল্পনা না কি ছিল কল্পকাহিনি তা নিয়ে বুধবার শান্তনু তাঁর বক্তব্য স্পষ্ট করে করেছেন। তিনি জানিয়েছেন তিনি বিজেপিতে ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন।

প্রসঙ্গত, এ দিনই শান্তনুর দাবি মতাে বনগাঁ লােকসভা এলাকাকে আলাদা সাংগঠনিক জেলা’ বলে ঘােষণা করা হয়েছে। রাজ্য বিজেপি প্রতিটি লােকসভা আসনকে একটি করে সাংগঠনিক জেলা হিসেবে দেখলেও এতদিন বনগাঁ বারাসত জেলার মধ্যেই ছিল।

বুধবারই নতুন বনগাঁ জেলা গঠন করে তার সভাপতি হিসেবে শান্তনুর ‘ঘনিষ্ঠ মানসপতি দেবের নাম ঘােষণা করা হয়। এর পরেই এ দিন বিকেলে হেস্টিংসে রাজ্য বিজেপির নির্বাচনী দফতরে মুকুলের সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠক সারেন শান্তনু।

রাজ্য বিজেপি সূত্রের খবর, আগামী ১৯ বা ২০ জানুয়ারি ঠাকুরনগরে যেতে পারেন অমিত। মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের সামনে নিজেই CAA নিয়ে কেন্দ্রের পরিকল্পনার কথা জানাবেন তিনি। তবে শান্তনুর মান ভাঙাতে কম কাঠখড় পােড়াতে হয়নি বিজেপিকে।

সম্প্রতি অমিত শাহের সফরের আগে গত ১৯ ডিসেম্বর ঠাকুরনগরে গিয়ে শান্তনুর সঙ্গে মতুয়া সমস্যা নিয়ে কথা বলেছিলেন রাজ্য বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তারপরেও শান্তনুর মুখে CAA ইস্যুতে বিরূপ মন্তব্য শােনা যেতে থাকে।

বনগাঁর সাংসদ এমনটাও বলেন যে, তাঁর কাছে আগে মতুয়া স্বার্থ। পরে বিজেপি। কৈলাসের পরে শান্তনুকে বােঝাতে দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘােষ-সহ অন্যরাও সক্রিয় হন। সে সব আলােচনায় শান্তনু যে সমস্ত দাবি করেছিলেন, তার প্রায় সবই বিজেপির রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মেনে নিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।

ঘটনাচক্রে এদিন শান্তনু দাবি করেছিলেন কেন্দ্রীয় অমিত শাহ নিজে মতুয়া সমাজের কাছে গিয়ে সিএএ-র বিষয়টি ব্যাখ্যা করুন।

উল্লেখ্য, গত ২০ ডিসেম্বর বােলপুরে সাংবাদিক বৈঠকে সিএএ কার্যকর হওয়া নিয়ে প্রশ্নের জবাবে অমিত বলেছিলেন, “করােনা পরিস্থিতির মধ্যে এত বড় অভিযান করা সম্ভব নয়। কেবল বিধি প্রণয়নই বাকি আছে।

করােনা ভাইরাসের টিকা এসে গেলে এবং করােনার শৃঙ্খল ভেঙে গেলে আমরা এই বিষয়ে ভাবব। যখন কাজ শুরু করব, তখন আপনাদের জানিয়ে দেব।” এরপরেই শান্তনু রায়গঞ্জের একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে দাবি করেছিলেন অমিতকে স্বয়ং ওই ব্যাখ্যা দিতে হবে মতুয়াদের সামনে।

তাঁর সব কথা মেনে নেওয়ায় কি নিজের জয় দেখছেন শান্তনু? এ দিন এই প্রশ্নের জবাবে শান্তনু ঠাকুর সংবাদ সংস্থাকে বলেন, “আমার জয় নয়। এটা মতুয়া সমাজের জয়।"

প্রসঙ্গক্রমে, শান্তনুর ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল মূলত রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘােষের একটি মন্তব্য ঘিরে। গােপালনগরে বিজেপির এক সভায় দিলীপ ঘোষ জানিয়েছিলেন, এক বছরের মধ্যে হিন্দু উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।

তারই প্রেক্ষিতে শান্তুনু পরে বলেন, “কোনও এক নেতার কাছে শুনলাম, এক বছর পরে নাকি সমাজে নাগরিকত্ব আইন চালু হবে। এত দেরি হলে আমাদের আর তার দরকার নেই। পরবর্তীকালে এমনিই আমরা নাগরিকত্ব পাব।”

একই সঙ্গে শান্তনু জানান, আগামী দিনে মতুয়া সমাজ কোনও সিদ্ধান্ত নিলে তিনি তার সঙ্গেই থাকবেন। মতুয়াদের সিদ্ধান্ত ছেড়ে রাজনীতির কথা ভাববেন না।

এখন অবশ্য শান্তনু বলছেন, দল নিয়ে তাঁর কোনও ক্ষোভই নেই। তিনি বলেন, আমি শুধু চেয়েছিলাম, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এখানে এসে ঘােষণা করুন। সেটা হচ্ছে জানার পরে আমি খুশি।

প্রসঙ্গত, বিজেপির উপর শান্তনু যে ভাবে নিয়মিত ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন, তাতে ময়দানে নেমেছিল তৃণমূল। দলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তৃণমূলে ফেরার জন্য শান্তনুকে আহ্বান জানিয়েছিলেন।

ঠাকুরবাড়ির অন্দরের সমীকরণে শান্তনুর বিরােধী মমতাবালা ঠাকুরও প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, শান্তনু তৃণমূলে এলে তাঁর শান্তনুর সঙ্গে কাজ করতে কোনও আপত্তি নেই।

বস্তুত, তৃণমূল সুযোগের অপেক্ষায় একটা সময়ে ভেবেছিল, শান্তনু বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে এলে সাংসদ সুনীল মণ্ডলের দলত্যাগের পাল্টা দেওয়া যাবে। তবে বুধবারের ঘটনা প্রবাহ বলছে, আপাতত শান্তি-স্বস্ত্যয়ন হয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Please do not enter any spam link in the comment box.

Post Top Ad