মালদা: নিজের পরিযায়ী শ্রমিক কাকাকে ঘর থেকে উচ্ছেদ করার অভিযােগ উঠল ভাইপাের বিরুদ্ধে।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত ভাইপাে এলাকার পরিচিত তৃণমূল নেতা। অভিযােগ অন্যায়ভাবে বাড়ি ভেঙে জায়গা দখল করার।যদিও অভিযােগ অস্বীকার ভাইপাের। পরিবার নিয়ে প্রাথমিক স্কুলে বাস করছেন ওই পরিযায়ী শ্রমিক।
জমি বাড়ি দেখভাল করার আশ্বাস দিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকের ঘড়ি ভেঙে জায়গা দখল করে নিজের পাকা বাড়ি তৈরি করে ফেলেছেন ভাইপাে তৃণমূল নেতা। দখল করেছেন জমিও।
ঘরবাড়িহীন, রােজগারহীন অসহায় ওই পরিবার ঠাঁই নিয়েছে স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলে। তিন সন্তান স্ত্রীকে নিয়ে স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলেই এখন ঠিকানা। প্রায় অনাহারে দিন কাটছে তাঁদের, গ্রামের কোনও লােকের কাছে ভিক্ষে চাইতে গেলেও জুটছে না ভিক্ষে। তৃণমূল নেতার প্রভাবে দায় এড়িয়েছে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত।
ঘটনাটি, মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরের মহেন্দ্রপুর গ্রাম-পঞ্চায়েত এলাকার আলিনগর গ্রামের। উল্লেখ্য, পরিযায়ী শ্রমিক রবিউল পরিবার নিয়ে গিয়েছিলেন দিল্লিতে নিরাপত্তা- রক্ষীর কাজ পেয়ে কিছু রােজগারের আশায়। কিন্তু করােনা আর লকডাউনে চলে যায় কাজ।
গ্রামের বসতবাড়ির দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন এলাকারই প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা নিজের ভাইপাে আলাউদ্দিন সাবির, (ওরফে সাবরুল) আর ভাই সফিজুলকে। কিন্তু লকডাউন শেষে ফিরে এসে দেখলেন তাঁদের সেই বসত বাড়ি ভেঙে সেখানে গড়ে উঠেছে অন্য বড় বাড়ি।
খোঁজ নিয়ে জানলেন তাঁর সেই ভাইপাে ও ভাই এমনটা করেছে। নতুন বাড়িটিও তাঁদের। শুধু বসত বাড়ি নয় সামান্য জমি ছিল তাও ভাইপাে কেড়ে নেয়।
টানা তিনদিন, তিন রাত খােলা আকাশের নীচে স্ত্রী আর দুই মেয়ে এক ছেলেকে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেরিয়েছেন রবিউল। সাহায্য চেয়েছেন বহু মানুষের। দরবার করেছেন থানায়। কিন্তু কেউ গুরুত্ব দেয়নি। বাধ্য হয়ে আশ্রয় নিয়েছেন আলিনগর প্রাথমিক স্কুলে। টানা তিনমাস ধরেই স্কুলই ঠিকানা।
এখন রােজগার নেই রবিউলের। কিছুদিন আগেই দিল্লিতে একটা অপারেশন করান। তারপর থেকে শারীরিক ভাবে দুর্বল। ছেলে-মেয়েদের পড়াশােনাও বন্ধ।
এদিকে যে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে এই অভিযােগ তিনি অভিযােগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তার দাবি জমির বদলে জমি দেওয়া হয়েছে তার কাকাকে। তবে, তৃণমূল নেতৃত্ব ব্যাপারটি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
শাসকদল অত্যাচার করছে বলে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।
অসহায় রবিউল বলেন, এটা আমার পৈতৃক ভিটে ছিল। পঞ্চায়েত, বিধায়ক সকলকে জানিয়েছি। এদিকে সরকারের দেওয়া ঘরের লিস্টে আমার নাম থাকলেও কবে পাব কেউ বলতে পারছে না।
এদিকে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা আলাউদ্দিন ওরফে সাবিরুল বলেন, এই ধরনের অভিযােগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমি কেন আমার কাকার জায়গা জোর করে দখল করব? জায়গার বদলে জায়গা দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি (BJP) বিজেপির মালদা জেলা সম্পাদক কিষাণ কেডিয়া বলেন,“তৃণমূল কেমন দল মানুষ এখন বুঝতে পারছে। যারা নিজের আত্মীয়র সঙ্গে অবিচার করে তারা আর মানুষের সঙ্গে কী সুবিচার করবে। আশা করি মানুষ পরবর্তীতে এর জবাব দেবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.