বহরমপুর : দীর্ঘদিন ধরেই প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্য সহ-শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে আসেন নির্দিষ্ট সময়ের দু'তিন ঘণ্টা পরে,এরপর তাঁরা শ্রেণিকক্ষেই মেতে ওঠেন মোবাইল নিয়ে। ছাত্রছাত্রীদের সামনে তাঁরা মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন বলে দাবী স্থানীয়দের।
সরকারি খাদ্য তালিকা মোতাবেক দেওয়া হয় না মিড-ডে মিল বলে অভিযোগ। ইতিপূর্বে বিষয়টি প্রধান শিক্ষক সহ অন্যদের বহুবার জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। বাধ্য হয়ে সোমবার বিদ্যালয়ের প্রধান প্রবেশদ্বারে তালা ঝুলিয়ে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামের মানুষ অভিভাবক -অভিভাবিকারা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় মুর্শিদাবাদ থানার ডাঙ্গাপাড়া গ্রামপঞ্চায়েতের ৫৬ নম্বর লালনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। যদিও গ্রামবাসীদের অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত শিক্ষকরা জানিয়েছেন, তাঁরা সঠিক সময়েই বিদ্যালয়ে আসেন এবং খুব প্রয়োজন না হলে তাঁরা কেউ শ্রেণিকক্ষে মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন না।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মুর্শিদাবাদ চক্রের অধীন এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ রয়েছেন চারজন শিক্ষক। অভিযোগ, প্রত্যেকেই প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ের
অনেক পরে বিদ্যালয়ে ঢোকেন। দেরিতে এসেই তারা ব্যস্ত হয়ে পড়েন মোবাইল নিয়ে। অন্যান্য দিনের মতো সোমবারও প্রায় দুপুর পৌনে বারোটা পর্যন্ত বিদ্যালয়ে কেউ না আসায়, বিদ্যালয়ের প্রধান প্রবেশপথের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন ক্ষুব্ধ অভিভাবক-অভিভাবিকারা। সেই সঙ্গে শুরু হয় তাদের বিক্ষোভ।
জালেমা বিবি, আকসানা পারভিন, গোলাম মোস্তাফা প্রমুখ অভিভাবক-অভিভাবিকারা ক্ষোভ উগরে বলেন, 'দেরি করে বিদ্যালয়ে আসা বা মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ার ঘটনা আজকের নয়। এটা বছরের পর বছর ধরে চলছে। বারোটার পরে শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে দুপুর ঢোকেন। আজও একজন শিক্ষক বারোটার সময় ঢুকেছেন। প্রধান
শিক্ষক এসেছেন দুপুর একটার পর। দেরিতে আসার পরেও যদি ঠিকমতো ক্লাস নেয় তাও হয়। এঁরা তাও করেন না। দেরি করে বিদ্যালয়ে ঢোকার পর ব্যস্ত হয়ে পড়েন মোবাইল নিয়ে।' তাঁরা আরও বলেন, 'ছোট ছোট ছেলে- মেয়েরা সরকারি নিয়ম মোতাবেক দশটা চল্লিশের মধ্যেই
বিদ্যালয়ে চলে যাচ্ছে। কিন্তু প্রধান শিক্ষক ও অন্য শিক্ষক -রা আসছেন দুপুর বারোটা, একটার পরে। বিদ্যালয়ে এসেই তাঁরা মোবাইল ঘাঁটতে শুরু করেন। কী করে একটি
সরকারি বিদ্যালয় চলছে, তা দেখারও কেউ নেই, বলারও কেউ নেই। আমরা গরিব মানুষ। ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ে পড়ানোর ক্ষমতা আমাদের নেই। তাই আমরা বাধ্য হয়েই সরকারি বিদ্যালয়ে ছেলেমেয়েদের ভর্তি করেয়েছি তারা
কিছু শিখবে বলে। কিন্তু আমাদের ছেলেমেয়েরা প্রাপ্য শিক্ষাটুকুও পাচ্ছে না। এভাবেই চলছে দু-তিন বছর ধরে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন, তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির এই অব্যবস্থার দিকে একটু
নজর দিন।'
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.