কলকাতার মুসলিম বহুল এলাকা মেটিয়াবুরুজ (Metiaburuz)-এ বসবাসকারী হিন্দু পরিবারগুলির ওপর প্রচন্ড নির্যাতন করা চলছে।
এখানে দলিত পরিবারগুলিকে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে ভয় দেখানো হচ্ছে যাতে ভূমি মাফিয়া তাদের জমি দখল করতে পারে। শেখ মুমতাজ নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে তার গুন্ডাদের নিয়ে হিন্দুদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করার অভিযোগ রয়েছে।
এর জন্য মহিলা, শিশু এবং বৃদ্ধারাও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। স্থানীয় কর্মী সুরজ কুমার সিং জানিয়েছেন শেখ মুমতাজ বেশ কয়েকদিন ধরে স্থানীয় আদিবাসীদের বাড়ি খালি করাতে চাইছে।
তিনি বলেন রবিবার (২২ ফেব্রুয়ারী ২০২১) শেখ মুমতাজের ছেলে তার কয়েকজন গুন্ডাদের নিয়ে সেখানে চড়াও হয় এবং সেখানকার আদিবাসী হিন্দুদের মারপিট করে ও হুমকি দেয় বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার জন্য।
তিনি বলেন এই দলিত হিন্দু বাঙালি পরিবার গুলির একমাত্র দোষ তারা বাংলায় বাস করে। মেটিয়াবুরুজে হিন্দুরা সংখ্যালঘু। তিনি বলেন হিন্দুদের পক্ষে এখন এলাকায় তাদের পরিচয় নিয়ে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শেখ মুমতাজ সম্পর্কে জানা গেছে সে পেশায় একটি বেসরকারী সংস্থায় প্রমোটার এবং তার দাবী সে প্রায় ৬ বছর আগে সে এই জমি কিনেছে।
অন্যদিকে, এখানে বসবাসকারী ৬ আদিবাসী হিন্দু পরিবারের দাবি এই জমিটি তাদের পৈতৃক ভিটে। তাঁদের কাছে এই জমির কাগজপত্র রয়েছে এবং তারা আদালতে মামলাও করেছেন যা এখনও আদালতে বিচারাধীন। তা সত্ত্বেও মুমতাজ তার গুন্ডাদের নিয়ে প্রায়ই হামলা করে।
গুন্ডারা প্রায়ই এই হিন্দু পরিবারগুলিকে প্রাণে মারার হুমকি দেয়। আদিবাসী হিন্দু পরিবারেরা জানিয়েছে সর্বশেষ ঘটনার ১ দিন আগে পুলিশকে জানানো সত্ত্বেও পুলিশের তরফ থেকে তারা কোনও সহায়তা পাননি। তাদের অভিযোগ, প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ এখন পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোনও অ্যাকশন নেয়নি।
রবিবার এই ঘটনা সম্পর্কে সুরজ বলেন শেখ মুমতাজ ৪০-৪৫ জন গুন্ডা নিয়ে আসে এবং সামনে হিন্দু পরিবারের যাকে পায় তাকেই প্রচন্ড মারধর করে। এতে বৃদ্ধ , মহিলা এবং শিশুরাও রেহায় পায়নি। তাদের মধ্যে কয়েকজন হসপিটালে ভর্তি হয়।
একই সাথে শেখ মুমতাজ ও তার গুন্ডাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সেখানে অবস্থিত হিন্দু মন্দিরে গরুর মাংসের টুকরা ফেলে দেয় এবং উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করে।
স্থানীয় লোকেরা বলেছে যে তারা হিন্দুদের তাড়িয়ে সেখানে মুসলিমদের বসাতে চায়। প্রশাসনের সহযোগিতা না থাকায় এখানকার সংখ্যালঘু হিন্দুরা খুবিই অসহায়।
হিন্দু কার্যকর্তা ও সংগঠনের মতে পশ্চিমবঙ্গে এখন এই ধরনের 'ল্যান্ড জিহাদ' (Land Jihad) সাধারণ ঘটনা। যার ফলে এই সব অঞ্চলে মায়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা মুসলমান এবং বাংলাদেশ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের বসানো হয়। যার ফলস্বরূপ হিন্দুরা তাদের সম্পত্তি হারায়।
এই ঘটনাটি সম্পর্কে সাংবাদিকেরা পুলিশের সঙ্গে অনেক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে কিন্তু পুলিশের সঙ্গে সম্পর্ক করা যায়নি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.