দেশ বিভাজনের পর পাকিস্তানে দেবী সীতার নামের পরিবর্তে 'রহমানী নগর' করা হয়েছিল।
এক সোস্যাল মিডিয়া ইউজার্স এই তথ্য দেন। আসলে, সাম্প্রতি একটি প্রচন্ড গতিবেগে ঝড় বোর্ডের উপরে লোহার চাদরটি উড়িয়ে নিয়ে যায়, যার ফলে আসল নামটি সকলের নজরে আসে, যেটি দেশ ভাগের আগেই দেবী সীতার নামে রাখা হয়েছিল।
পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের এই অঞ্চলের নাম প্রদর্শন করে একটি পাথরের কাঠামোর উপরে লাগানো লোহার ভাঙা চাদরের ছবি শেয়ার করে এক সোশ্যাল মিডিয়া ইউজার্স লিখেছেন, "দাদু জেলায় গড়ে ওঠা ছোট স্টেশনটির নামকরণ করা হয়েছিল সীতা রোড"।
কিন্তু ধর্মের ভিত্তিতে দেশ বিভক্ত হওয়ার পরে এর নাম 'রহমানি নগর' (Rehmani Nagar) রূপে পরিবর্তিত হয়। তবে গত কালকের প্রবল ঝড় রহমানি নগর লেখা লোহার চাদর সরিয়ে দিয়ে আসল নামটি উজাগর করেছে। "
ছবিটি কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করলে স্পষ্ট বোঝা যায় যে প্রাথমিকভাবে 'সীতা রোড' (Sita Road) একটি পাথরের কাঠামোতে খোদাই করা হয়েছিল, পরে এটি উর্দুতে 'রহমানি নগর' খচিত ধাতব চাদর দ্বারা আবৃত করা হয়েছিল।
The small station was established as "Sita Road" in Dadu district but was renamed after partition by some religious element as Rehmani Nagar. But strong storm yesterday removed the iron sheet inscribed with Rehmani Nagar & exposed the original name. pic.twitter.com/zFWgBcylLO
— Kapil Dev (@KDSindhi) March 23, 2021
গতকাল, এই অঞ্চলে প্রবল বেগে ঝড়ো বাতাস পাথরের কাঠামোর উপরে লোহার চাদরের একটি অংশ সরিয়ে দেয়, এর পরে স্থানটির মূল নামটি বেরিয়ে এসেছে।
তবে, 'সীতা রোড' পাকিস্তানের একমাত্র রাস্তা নয় যা পাকিস্তানের পরিচয় ফিরিয়ে আনার জন্য দেশ বিভাগের পরে নামকরণ করা হয়েছিল। বছরের পর বছর ধরে, পাকিস্তান এমন অনেক রাস্তার নাম, ঐতিহ্যবাহী স্থান গুলির নাম বদলেছে যা একসময় হিন্দু এবং শিখদের নামে ছিল।
উদাহরণ স্বরূপ, করাচির রামবাগ আরামবাগে পরিণত হয়, লাহোরের কৃষ্ণ নগরের নাম পরিবর্তন করে ইসলাম- পুর রাখা হয়, কাসুরের 'ভান রাধা রাম' নাম বদলে রাখা হয়েছিল হাবিবাবাদ, এবং ভাই ফেরুর নাম বদলে রাখা হয়েছিল ফুল নগর।
এছাড়াও, মধ্য লাহোরে, জৈন মন্দির চৌকটির নামকরণ করা হয়েছিল একটি হিন্দু মন্দিরের নামে। ১৯৯২ সালে ভারতের অযোধ্যাতে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের প্রতিশোধ নিতে মন্দিরটি ভেঙে দেওয়া হয়েছিল এবং স্থানটির নামকরণ করা হয় 'বাবরি মসজিদ চৌক'।
এরকম আরও অনেক উদাহরণ রয়েছে। দেশ বিভাগের আগে লাহোরে 'লক্ষ্মী চৌক' শহরে অন্যতম বৃহত্তম দীপাবলি উদযাপন করা হতো। মাওলানা জাফর আলি খান চৌক নামে একজন উর্দু সাংবাদিকের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়, যিনি তাঁর পত্রিকার মাধ্যমে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়েছিলেন।
মূলত, ইসলামী চরমপন্থার কারণে পাকিস্তানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের, বিশেষত সংখ্যালঘু হিন্দুদের দুর্দশা দিন দিন বাড়েই চলেছে। বছরের পর বছর ধরে, হিন্দু মেয়েদের অপহরণ করে এবং তাদেরকে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তর করতে বাধ্য করার অনেক খবর পাওয়া যায়।
এছাড়াও, হিন্দু মন্দির গুলিতে হামলা এবং হিন্দু বাড়ি গুলিকে সরকারের স্বতন্ত্র সমর্থন দিয়ে বুলডোজার চালানোর অনেক উদাহরণ রয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.