মালদা: পরিবারে অভিভাবকহীন দশম শ্রেণির ছাত্রীর অসহায় অবস্থা দেখে সহযােগিতার হাত বাড়িয়ে দিল স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব।
চরম দারিদ্র্যের জেরে দীর্ঘদিন ধরে কচু শাক পাতা, হিঞ্চে শাক পাতা খেয়ে অনাহারে অর্থাহারে দিন কাটাচ্ছিল মালদার বাংরুয়া গ্রামের বাসিন্দা দুলি খাতুন।
পাশাপাশি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকেও ওই ছাত্রীকে সহযােগিতা করা হয়েছে। অথচ এখনও পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত প্রশাসনের পক্ষ থেকে অসহায় ওই ছাত্রীকে কোনও রকম সাহায্য করা হয়নি বলেও অভিযােগ স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের।
চাঁচল মহাকুমার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাংরুয়া গ্রামের বাসিন্দা দুলি খাতুন (১৬)। সে তুলসিহাটা হাই স্কুলের দশম শ্রেণিতে পাঠরত।
উল্লেখ্য, বহুদিন আগে বাবা ছেড়ে চলে গিয়েছে। এক বছর আগে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মায়ের মৃত্যু হয়েছে। এই অবস্থায় অভিভাবকহীন হয়ে অর্ধাহারে দিন কাটছিল দশম শ্রেণির ছাত্রী দুলি খাতুনের।
এরপরই দুলি খাতুনের খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হতেই বিভিন্ন তরফ থেকে সহযােগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে অনেকেই। কেউ দিয়েছে নগদ টাকা, কেউ বা দিয়েছেন খাদ্য সামগ্রী, কেউ বা জামা জুতাে পর্যন্ত দিয়েছেন।
অনেক জায়গা থেকে ভবিষ্যতে আবাসিক মিশনে থেকে পড়াশােনা করার প্রতিশ্রুতি এসেছে। কিন্তু এরই মধ্যে উঠেছে ভয়াবহ অভিযােগ। অভিযােগকারী স্বয়ং দুলি খাতুন ও তার দাদু খলিল শেখ।
দুলি খাতুন ও খলিল শেখ বলেন, এলাকার তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক তাজমুল হােসেন-র কিছু কর্মীরা তাকে দিনরাত ভয় দেখাচ্ছে, যাতে সে বাইরের লােকের কাছ থেকে সাহায্য না নেয়। কারও কাছ থেকে সাহায্য নিলে নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযােগ তুলেছেন তাঁরা।
হুমকি পাওয়ার পর থেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে দুলি খাতুন। দুলি খাতুন বলেন, আমার এই অসহায় অবস্থার কথা জেনে অনেকেই এসেছেন, সহযােগিতা করেছেন। কিন্তু এখন এলাকারই এক শাসক দলের নেতার কিছু অনুগামীরা আমাকে ধমকাচ্ছেন।
এই অবস্থায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এদিকে রবিবার সকালে অসহায় ওই ছাত্রী দুলি খাতুনের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপির জেলা প্রতিনিধি।
এই দলে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির জেলা সম্পাদক দীপঙ্কর রাম, মণ্ডল সভাপতি রূপেশ আগারওয়ালা, দলের সাধারণ সম্পাদক কিষান কেডিয়া প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
তারা দুলি খাতুনের সঙ্গে দেখা করেন এবং তাকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দেন।
এ প্রসঙ্গে বিজেপির জেলার সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর রাম বলেন, আমরা দুলি খাতুনের সঙ্গে কথা বললাম। শুনতে পেলাম এলাকার শাসক দলের কর্মী সমর্থকরা ওকে ভয় দেখাচ্ছে। এটা খুব নিন্দনীয় ব্যাপার।
আমরা ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে দুলির পাশে সব সময় রয়েছি। ওর শিক্ষা আশ্রয় ও খাদ্যের সমস্ত রকম ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছি।
এদিকে শাসকদলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযােগকে অস্বীকার করেছেন প্রাক্তন বিধায়ক তথা হরিশ্চন্দ্রপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী তাজমুল হােসেন। তিনি বলেন, এই ধরনের কোনও ঘটনার কথা জানা নেই। এটা বিজেপির চক্রান্ত।
হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মানিক দাস জানান, মেয়েটিকে যতদূর সাহায্য করা সম্ভব তিনি করবেন, তবে শাসক দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে কেউ যদি মেয়েটিকে কোনওভাবেই ভয় দেখায় সেটি কোনও মতেই সমর্থন যােগ্য নয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.