সিপিএম তথা সংযুক্ত মোর্চার কোনও দিশা ছিলনা বলেই বিধানসভায় এবার বামশূন্যি হয়েছে।
এই অভিযােগের পাশাপাশি বিধানসভার ভােটে ইভিএম (EVM) এ কারচুপি হয়েছে বলে অভিযােগ তুললেন উত্তর দমদমের পরাজিত বাম প্রার্থী তন্ময় ভট্টাচার্য (Tanmoy Bhattacharya)। বাংলায় সিপিএম (CPM)-র ভরাডুবির একটি কারণ বলে অভিযােগ করলেন তিনি। এই নিয়েই শুরু হয়েছে দলের অভ্যন্তরে চাপান উতাের।
তন্ময়বাবু আরও বলেন আইএসএফ (ISF) নিজেদের আটটি জনজাতি মাের্চার জোট হিসেবে জাহির করেছে। কিন্তু যখন সংযুক্ত মাের্চার সঙ্গে জোট হল তখন পীরজাদা হিসেবে আব্বাস সিদ্দিকি (Abbas Siddiqui)-কে তুলে ধরা হয়েছে, যা মানুষের কাছে খারাপ বার্তা গিয়েছে। আর এটাই ভরাডুবির অন্যতম কারণ বলে ব্যাখ্যা করেছেন তিনি।
বাম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য বিধানসভা ভােটে হারের জন্য নেতৃত্বকে তুলােধনা করেছেন। ভরাডুবির পর একটি সােশ্যাল মিডিয়ার চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি চাচাছােলা ভাষায় রাজনেতৃত্বের তুলােধনা করেন।
এই খবর যেদিন লেখা হচ্ছে, সেদিন প্রবীণ বাম নেতা বিমান বসু (Biman Basu) বামফ্রন্ট চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে দাঁড়াতে চেয়ে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এই অবস্থায় তন্ময় ভট্টাচার্যের গলায় শােনা গেল ইভিএমে কারচুপির কথা।
একটি সােশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে উত্তর দমদমের প্রার্থী বলেন, ২০১৯-এর নির্বাচন ছাড়া বাকি ১৯৮৪ সাল থেকে সব কটি লােকসভা নির্বাচনে আমি যে বুথের ভােটার সেই বুথে জিতেছিলাম।
এবারের একুশের নির্বাচনে আমাদের সমর্থক প্রার্থী ১৪৬ টি ভােট পেয়েছে। আমি কড়গুনে চেষ্টা করছিলাম এই ফলাফল বিশ্লেষণ করতে। আমি আমার বুথকে হাতের তালুর মতাে চিনি। ধরুন আমি আমার পার্টি সদস্য তাঁর ভােটটা তুললাম তাঁর মেয়ের এসএফআই (SFI) করে তাঁর ভােটটা তুললাম। কিন্তু তাঁর বউয়ের ভােটটা তুললাম না। এইভাবে হিসেব করেও আমি ১৮০-টি ভােটের নিচে নামতে পারলাম না। কিন্তু আমরা পেলাম ১৪৬ টি ভােট।
তন্ময় ভট্টাচার্যের সংযােজন, দুটো সন্দেহ আমার মধ্যে রয়েছে। একটা হচ্ছে যে সত্যি কেউ আমাদের ভােট দেয়নি। আর একটা হচ্ছে যে ইভিএম মেশিন তা কি ঠিক ছিল? এই কথাগুলাে আমি আমার আগের ইন্টারভিউতে বলিনি। কারণ, সেই সময় বুথভিত্তিক বিশ্লেষণ আমার কাছে ছিল না।
উত্তর দমদমের প্রার্থীর প্রশ্ন, ইভিএম মেশিনে বড় কারচুপি হয়ে গেল না তাে? এই ফলাফল আমার কাছে একেবারেই বিশ্বাসযােগ্য হচ্ছে না। এই প্রথম তন্ময় ভট্টাচার্য ইভিএম মেশিনে কারচুপি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলেন। রাজ্য নেতৃত্ব ভােটের ফলাফল ঘােষণার পর রাজ্য নেতৃত্বকে তুলােধনা করে তন্ময় ভট্টাচার্য বলেছিলেন, পরাজয়ের দায় নেতৃত্বকে নিতে হবে।
তাঁর মতে, বামেদের ভরাডুবিই ছিল নেতৃত্বের মনস্কামনা, আর তা পূর্ণ হয়েছে। নেতৃত্বকে কটাক্ষ করে বলেন, তাঁরা রাস্তায় থাকুন। যাঁরা ভােটের রাজনীতি করে, তাঁরা ভােট পেয়েছে, ঠিকই আছে। মানুষ তাঁদেরই বেছে নিয়েছে। ধরে
নেওয়া হয়েছিল, এই মন্তব্য রাজ্য নেতৃত্ব মেনে নেবে না।
কেন তন্ময় ভট্টাচার্য এই ধরনের মন্তব্য করেছেন, তা জানতে চেয়ে তাঁকে শােকজ করা হয়েছে বলে খবর।যদিও তিনি তা অস্বীকার করেছেন। আর এর পরে পরেই ইভিএম নিয়ে বিস্ফোরক অভিযােগ করলেন তন্ময়বাবু।
আইএসএফের সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে তন্ময়বাবু বলেন, আইএসএফ নিজেরাই বলেছে আটটি জনজাতি গােষ্ঠীর বিরুদ্ধে তাঁদের লড়াই। সেই লড়াইয়ে তারা ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট নাম দিয়েছে।
এই ফ্রন্টের সঙ্গে যােগ দিয়েছে বাম নেতৃত্ব। তবে এই ফ্রন্টের সামনে চলে এসেছে আব্বাস সিদ্দিকির পীরজাদার মুকুটটি। এর ফলে মানুষ এই জোটকে মেনে নিতে পারেননি। তাই ভরাডুবি হয়েছে বলে সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন তন্ময়বাবু।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.