নরেন্দ্রপুর: কোভিড পরিস্থিতির ভয়ংকর বিপর্যয়ের কথা মাথায় রেখে এ বার ভারত সেবাশ্রম সংঘে সেফ হোম তৈরি হল।
শুক্রবার গড়িয়া ভারত সেবাশ্রম সংঘের ক্যাম্পাসে একটি সেফ হোম করা হয়। সেখানে একসঙ্গে ২০ জন আক্রান্ত- কে অক্সিজেন সাপাের্ট এবং দশ জনকে আইসােলেশন সাপাের্ট দেওয়া সম্ভব। ১৯১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত আচার্য শ্রীমৎ স্বামী প্রণবানন্দজি মহারাজের এই আশ্রমে আমিষ খাবারের প্রবেশ নিষেধ ছিল।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত কোনওদিন এক টুকরাে মাছ কিংবা ডিম ঢােকেনি সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে থাকা আশ্রমের কোনও শাখায়। কিন্তু এবার এই প্রথম ১০৪ বছরের নিয়ম ভেঙে আশ্রম প্রাঙ্গণে আমিষ খাবার পরিবেশন করার ছাড়পত্র দিলেন স্বামীজিরা। এবার সেই আশ্রমেই ঢুকেছে ডিম সিদ্ধ, মাছ, মাংস, মুরগির স্যুপ।
মানুষের সেবার ব্রতে ব্রতী ভারত সেবাশ্রম শতাব্দী প্রাচীন প্রথা ভাঙল। তাদের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে যুগান্তকারী বলছেন চিকিৎসকরা।
প্রােটিনযুক্ত খাবার খুবিই দরকার করােনা রােগীদের জন্য।
শরীরে কোষের গঠনে প্রোটিন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আর দুর্বল শরীরে শক্তির জোগান দিতেও প্রােটিনের চাহিদা এ সময়ে যথেষ্ট। তাই খাদ্য তালিকায় রােজ কিছুটা পরিমাণ প্রােটিন রাখতেই হবে। যার মধ্যে
অনিবার্য মাছ, মাংস, ডিম, ডাল, সয়াবিন, পনিরের মতাে খাদ্য উপাদান।
ভারত সেবাশ্রম সংঘের স্বামীজিরা বলছেন, এখন ধর্মীয় অনুশাসনের থেকে বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে মানবসেবা। প্রথমে ২৫ বেডের কথা ছিল।কিন্তু গড়িয়া ভারত সেবাশ্রম সংঘ (Bharat Sevashram Sangha) আরও ৫ টি বেড বাড়িয়েছে মানুষের চাহিদার কথা ভেবে।
করােনা আক্রান্তদের দেখভাল করার জন্য কয়েকজন চিকিৎসক, নার্স, আয়া রাখার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। ওই
আশ্রমের প্রাক্তন ছাত্র রাজীব দত্তের উদ্যোগে এই সেফ হােম চালু করা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, এই সেফ হােমের জন্য ১০৪ বছরের নিয়ম বদলালাে ভারত সেবাশ্রম। করােনা রােগীদের মুখ চেয়ে পথ্যে মাছ-মাংস-ডিম রাখা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের ইতিহাসে আমিষ পদ এই প্রথম।
আশ্রমের প্রাক্তনী রাজীব বর্তমানে ছবি পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত। পাশাপাশি তিনি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা চালান।সেই সংস্থার উদ্যোগে এ দিন আশ্রমের দুটি হলঘরে এই ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
রাজীব বলেন, ‘প্রথমদিকে আমরা লােকের বাড়িতে গিয়ে অক্সিজেন সাপাের্ট, হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করতাম। তাতে অসুবিধা দেখা দেওয়ায় সেফ হােমের ভাবনা চিন্তা করে জায়গার জন্য আশ্রমের সাথে যােগাযােগ করি।আশ্রম কর্তৃপক্ষ রাজি হয়ে যাওয়ায় কয়েকজন বন্ধুর সহযােগিতায় এখানে সেফ হােম করেছি।
তিনি বলেন আশা করছি সাধারণ মানুষের খুব উপকার হবে। এ দিনই কাজ শুরু করল এই সেফ হােম। ফলে গড়িয়া এলাকার মানুষের উপকার হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.