কৃষ্ণনগর: তৃণমূল না করায় বিদ্যুতের মিটার ভাঙচুর, মহিলাদের মারধর করা ও কাপড় ছিড়ে দেওয়ার অভিযােগ উঠল দিগনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান স্মরজিৎ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে।
বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীদেরও তিনি মারধর করেন বলে অভিযােগ। মহিলাদের অভিযােগ, রবিবার রাতে প্রধান নেশাগ্রস্থ অবস্থায় এই কাজ করেছেন। যদিও অভিযােগ অস্বীকার করেছেন প্রধান। তাঁর পাল্টা দাবি, মহিলারা ধাক্কা মারায় তিনিই বরং আহত হয়েছেন। দিগনগরের প্রধান স্মরজিতের বাড়ি উত্তর হাতিশালা গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেশ কিছু দিন ধরে প্রতিবেশী কয়েকটি পরিবারের সঙ্গে তাঁর বিবাদ চলছিল। অভিযােগ,
রবিবার রাত ৯টা নাগাদ প্রধান তাঁর দুই সঙ্গীকে নিয়ে পরপর চারটি বাড়ির বিদ্যুতের মিটারের তার ছিড়ে দিয়ে ভাঙচুর চালান।
প্রথমে ওই পরিবারের লােকজন তাঁকে কিছু না বলে স্থানীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ দপ্তরে খবর দেন। কিছুক্ষণের মধ্যে তাদের মােবাইল ভ্যান মিটার সারাতে চলে আসে। কিন্তু প্রধান মিটার মেরামতে বাধা দেন, এমনকী সংস্থার এক কর্মীকে মারধরও করেন বলে অভিযােগ।সেই সময়ে ওই চারটি বাড়ির অভিযুক্ত গ্রাম ও মহিলারা প্রতিবাদ করলে প্রধান তাঁদের চুলের মুঠি ধরে মারধর করেন বলে অভিযােগ।
শুধু তাই নয়, তাঁদের কাপড় টেনে ছিড়ে দেওয়ার অভিযােগও রয়েছে। এর পরেই এলাকায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। অন্য মহিলারাও খেপে গিয়ে প্রধানকে তাড়া করেন। পরে প্রধানকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা।
খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই রাতেই মহিলারা কোতােয়ালি থানায় গিয়ে প্রধান স্মরজিৎ বিশ্বাস ও তাঁর দুই সঙ্গী সুফল বিশ্বাস ও অমিত বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অভিযােগপত্র জমা দিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান আসেন।
ওই মহিলাদের অন্যতম জয়িতা বিশ্বাসের অভিযােগ, প্রধান মদে চুর হয়ে ছিলেন। আমরা তৃণমূলকে ভােট দিইনি দাবি করে তিনি বিদ্যুত সংযােগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
আমাদের চুলের মুটি ধরে কিল-চড় মারেন, এমনকি কাপড় টেনে ছিড়ে দিয়েছেন।
দিগনগর ইলেকট্রিক সাপ্লাই অফিসের স্টেশন ম্যানেজার সৌরভ মােদক বলেন, ‘মিটার ভাঙচুরের খবর পেয়ে আমাদের কর্মীরা সারাই করতে গিয়েছিলেন। শুনেছি, প্রধান তাঁদেরকেও বাধা দিয়েছেন। এক জন কর্মীকে মারধরও করেছেন বলে শুনছি। দেখি, ওই কর্মী লিখিতভাবে কী জানান। সেই মতাে আমরা পদক্ষেপ
করব।
প্রধান স্মরজিৎ বিশ্বাস অবশ্য যাবতীয় অভিযােগ উড়িয়ে দিয়ে দাবি করেন, “আমার জমির উপর দিয়ে তার নিয়ে গিয়ে ওদের বিদ্যুৎ সংযােগ করিয়ে দিয়েছিলাম, এখন ওরাই আমায় গালিগালাজ করে। তবে আমি বা আমার কোনও লােক ওদের মিটার ভাঙিনি। বিদ্যুৎ দপ্তরের কোনও কর্মীকেও মারধর করা হয়নি। সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযােগ করা হয়েছে।
তাঁর আরও দাবি, ‘ওরাই বরং আমায় এমন ভেবে ঠেলে পাঁচিলের ওপরে ফেলে দিয়েছে যে আমি আহত হয়েছি। ওই চার পরিবারের মহিলারা কেন তাঁর বিরুদ্ধে অভিযােগ আনছেন?
প্রধানের দাবি, ‘ওই এলাকায় একটি পরিবার বাংলা আবাস যােজনার ঘর পেয়েছে সেটাই ওদের রাগ।অভিযােগ পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.