আরামবাগ: উচ্চ মাধ্যমিকের ফল নিয়ে পড়ুয়াদের অসন্তোষের কারণ খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যসচিব। বলেছিলেন, কোনও ত্রুটি হয়ে থাকলে দ্রুত যেন তা সংশােধন করে নেওয়া হয়।
নবান্নের সেই নির্দেশ মেনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কাজে নেমে পড়ল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। সুফল প্রথম দিনই! পুনর্মূল্যায়নে নম্বর বাড়ল হুগলির আরামবাগ গার্লস হাই
স্কুলের ১৩৭ জন ছাত্রীর।শনিবার নবান্নে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর সঙ্গে বৈঠকেই রবিবার সংসদের দফতর খােলা রাখার সিদ্ধান্ত
হয়েছিল।সেইমতাে রবিবার সকাল থেকেই পুনর্মূল্যায়নের কাজ শুরু করে দেয় উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। শুরু হয়
ফলাফল সংক্রান্ত অভিযােগ জমা নেওয়ার কাজ।
আগামী সাতদিন ধরে এই অভিযােগ জমা নেওয়ার কাজ চলবে বলে জানিয়েছে সংসদ। এদিন এর মধ্যেই সংসদ কার্যালয়ে কয়েকজন অভিভাবক ও ছাত্র-ছাত্রী অভিযােগ জানাতে হাজির হন। কিন্তু, সংসদ সভাপতি মহুয়া দাস
তাদের জানিয়ে দেন, অভিযােগ জমা দিতে হবে স্কুলের মাধ্যমেই। অভিযােগ জমা না নিয়ে ফিরে যেতে হওয়ায়
বিক্ষোভ দেখান হাজির হওয়া অভিভাবক, ছাত্র-ছাত্রীরা।
কিন্তু এদিনের বড় চমক ছিল অন্য! উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর কম নম্বর দেওয়ার অভিযােগে তুমুল বিক্ষোভ হয়েছিল হুগলির আরামবাগ গার্লস স্কুলে।
গত দু’দিন ধরে অশান্তিতে উত্তাল ছিল স্কুলের পরিবেশ। দাবি উঠেছিল পুনর্মূল্যায়নের। সেই অভিযােগের ভিত্তিতে দ্রুত পুনর্মূল্যায়নের পর রবিবার উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের থেকে সংশােধিত মার্কশিট এসে পৌঁছয় স্কুলটিতে।
দেখা যায়, নতুন মার্কশিটে স্কুলের মােট ২৬২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৩৭ জনেরই নম্বর বেড়েছে। স্কুলের সর্বোচ্চ নম্বরও ৪৬৩ থেকে বেড়ে ৪৮২ হয়েছে। দ্রুত ও ন্যায্য মূল্যায়নে বেজায় খুশি স্কুলের ছাত্রী ও অভিভাবক -রা।
ছাত্রীদের বক্তব্য, ভুল নম্বর এসেছিল বলেই প্রতিবাদ করেছিলাম। এখন আমরা সঠিক মূল্যায়ন পেয়েছি। আরামবাগ গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রাজশ্রী দে বলেন, “স্কুলের কোনও সমস্যা ছিল না এ ক্ষেত্রে। হিসাবে কিছু গণ্ডগােল ছিল। সেই সমস্যা মিটে গিয়েছে। আমরা খুশি।”
স্কুলের বিজ্ঞান শাখার ছাত্রী দেবলীনা দাসের নম্বর সংশােধনের পর ৪৬৩ থেকে বেড়ে ৪৮২ হয়েছে। বিজ্ঞান
শাখার মধুবন সরকারেরও নম্বর বেড়ে হয়েছে ৪৮২। তারপরও অবশ্য অভিযােগের হাত থেকে রেহাই মিলছে না সংসদের।
এভাবে সংসদ কর্তৃপক্ষের ভুলে ছাত্র-ছাত্রীদের হয়রানির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে এদিনও মুখর শিক্ষক মহল। নম্বর বিভ্রাটের নিরপেক্ষ তদন্ত ও সংসদ সভাপতির পদত্যাগের দাবি তুলে অ্যাডভান্সড সােসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড
হেডমিস্ট্রেসেস-এর সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি এদিন বলেন, “সারা রাজ্যে বহু মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর থেকে বঞ্চিত।
সঠিকভাবে সফ্টওয়্যার ডেভলপমেন্ট ছিল না। আমরা চাই, সফ্টওয়্যার ডেভলপমেন্ট করে নতুন রেজাল্ট প্রকাশ করা কলেজিয়াম অফ হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস- এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, “সংসদ নিজেদের ঘােষিত ফর্মুলা ব্যবহার করতে গিয়ে নিজেরাই ভুল করায় ছাত্র-ছাত্রীদের যে অযথা হয়রানি পােয়াতে হচ্ছে তা অনভিপ্রেত। ছাত্র-ছাত্রীদের মার্কশিট সংশােধনের প্রক্রিয়া জরুরিভিত্তিতে করা উচিত ও ওয়েবসাইটে লিঙ্ক দেওয়া উচিত বলে মনে করি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.