মহাকাশ চিরকাল রহস্যময়।
অন্তরীক্ষে লুকিয়ে থাকা অপার রহস্য মানুষকে অমােঘ আকর্ষণে আবিষ্ট করে রাখে। যুগ যুগ ধরে বিজ্ঞানীরা এই
মহাজাগতিক বিস্ময়ের উন্মােচনে জীবনপাত করে চলেছেন, তারপরেও রহস্য বেড়েছে বই কমেনি। সেই বিশ্বাসকে শতগুনে বাড়িয়ে দিয়ে আবার এক মহা- জাগতিক বিস্ময় চমকে দিল তামাম বিশ্বকে।সম্প্রতি মহাকাশ চর্চাকেন্দ্র নাসা (NASA) তাদের টুইটার হ্যান্ডেলে মহাকাশের কিছু ছবি পােস্ট করেছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে নিকষ কালাে অন্ধকার আকাশে জ্বল জ্বল করছে ‘ঈশ্বরের হাত’ বা ‘হ্যান্ড অফ গড'(Hand of God)। বিভিন্ন দিক থেকে তােলা ছবিগুলিতে ভগবান বা ঈশ্বরের হাতের কোনােটার রঙ হলুদ, নােটার রঙ নীল, কোনােটার লাল, আবার কিছু ছবিতে রঙ ঝাপসা হয়ে গেছে, কোনােটার ভিতর থেকে আলাে ঠিকরে বেরােচ্ছে।
নাসা-র মতে মহাকাশে কোনাে একসময় নক্ষত্র বিস্ফোরণ ঘটে, সেই নক্ষত্রের ধ্বংসাবশেষ থেকে উৎপন্ন শক্তিকণা দ্বারা সৃষ্ট নীহারিকাই ঈশ্বরের হাতের আকৃতি ধারণ করেছে।
হ্যান্ড অফ গড' কথাটা শুনলেই চোখে ভাসে স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শককে বিস্ময়াভূত করে সবুজ ঘাস-মাঠের পরিপ্রেক্ষিতে ফুটবলের কিংবদন্তি মারাদোনার সেই বিখ্যাত বিতর্কিত গােল। তবে এবার সবুজ মাঠে নয়, ‘হ্যান্ড অফ গড’ খেলছেন অনন্ত অনিঃশেষ মহাকাশে।
নাসার ‘নুস্টার’ NuSTAR- Nuclear Spectroscopic Telescope Array টেলিস্কোপের তােলা ছবি দেখে বিজ্ঞানীরাও হতবাক। তাঁদের মতে ছবিগুলাে হল একাধিক গ্যালাক্সির সমষ্টি। নাসা-র ‘নিউক্লিয়ার স্পেক্টোস্কোপিক টেলিস্কোপ অ্যারে’ নীল রঙের কিছু ছবি তুলেছে।
অন্যদিকে নাসা-র চন্দ্র এক্স-রে সবুজ ও লাল রঙের ছবি তােলে। সব ছবিগুলাে একসাথ করে এই অপার্থিব ঈশ্বরের।হাতের আদল পাওয়া গেছে। এটি পৃথিবী থেকে প্রায় ১৭ হাজার আলােকবর্ষ দূরে অবস্থিত, আর এই হাত তেত্রিশ আলােকবর্ষ এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। এটি সার্কিনাস নক্ষত্রমণ্ডলে (Circinus constellation) অবস্থিত।
বিজ্ঞানীদের মতে, এই ধরণের অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল ঘটনা মহাকাশে প্রায়শই ঘটে থাকে। কখনও তা কোনও পশুর চেহারা নেয়, কখনও মানুষের; তবে এবারের ছবিটি বিজ্ঞানী -দের কাছেও অভিনব লেগেছে।
New 'hand of God' image captured by Nasa http://t.co/ZqoiE2UTtc pic.twitter.com/NBV3yh7bS6
— The Times Of India (@timesofindia) January 12, 2014
নাসা-র টেলিস্কোপ স্টার-এর কেরামতি দেখল সারা দুনিয়া। একটা মৃত তারার ভিতরকার সঞ্চিত শক্তির বিভিন্ন পর্যায়ের ছবি প্রকাশ করল। এখন এই হাতের মত দেখতে ছবি নিয়ে মেতেছে গােটা বিশ্ব।
আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের এই মহাকাশ চর্চা কেন্দ্র, ‘নাসা’।২০১২ সালের ১৩ জুন নুস্টারকে মহাকাশে উৎক্ষেপণ।করে। এটি হল পৃথিবীর প্রথম মহাকাশ গবেষণা এক্স-রে টেলিস্কোপ, যেটা উচ্চ এক্স-রে এনার্জির সাহায্যে মহাকাশের বিস্তীর্ন সীমা পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম।
এই টেলিস্কোপের মূল কাজ হল, ব্রহ্মাণ্ডের উচ্চ শক্তি- সম্পন্ন এক্স রশ্মি অন্বেষণ, বিভিন্ন ছায়াপথ, মিল্কিওয়ের মধ্যে অবস্থিত ব্ল্যাক হােল, মৃত বা বিস্ফোরিত তারা এবং অন্যান্য জ্যোতিষ্কের ছবি তােলা এবং মহাকাশ গবেষণায় সাহায্য করা।
নুস্টারে ধরা পড়া এই সব ব্ল্যাক হােল (Black hole) বা নেবুলা আমাদের সূর্যের চেয়েও বিলিয়ন গুন বেশি শক্তিশালী। এই ‘হ্যান্ড অফ গড’-এর সৃষ্টিরহস্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মৃত তারাটির মধ্যে নিউক্লিয়ার এক্সপ্লোশন হওয়ার ফলে তৈরি হয়েছিল তীব্র আলােকোজ্জ্বল সুপারনােভা। এর ফলে তারাটি একটি পালসারে পরিণত হয়। এই পালসারের নাম পিএসআরবি ১৫০৯-৫৮।
উনিশ কিলােমিটার বিস্তৃত পালসারটি থেকে প্রচুর আলােকরশ্মি নির্গত হচ্ছিল। সেই আলােকরশ্মি গুলি একটি চৌম্বকক্ষেত্রে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার কারণে প্রচুর এক্স-রশ্মি তৈরি হয়। সেই এক্স-রশ্মি থেকে এক ধরনের মেঘ সৃষ্টি হয়, যেটাকে দেখতে অনেকটা হাতের মত। তবে বিজ্ঞানীরা এখনও নিশ্চিত নন যে এটি সত্যি করে কোনাে মহাজাগতিক বিস্ময় না অপটিক্যাল ইলিউশন।
নাসার বিজ্ঞানীদের মতে এটি একটি সুপারনােভা বিস্ফোরণ, যার আলাে প্রায় ১৭০০ বছর আগে পৃথিবীতে পৌঁছেছিল, তখন পৃথিবীতে মায়া সভ্যতার আমল। তাঁদের মতে, নক্ষত্রের বিস্ফোরণই পালসার সৃষ্টি করে সেই পালসার থেকে যে ঘন মেঘের সৃষ্টি হয় তার মধ্যে অনেক চৌম্বক শক্তি থাকে। তবে ছবিতে দেখা যাচ্ছে এই মেঘের ঘনত্ব দিন দিন কমে যাচ্ছে; এভাবে চলতে থাকলে ‘হ্যান্ড অফ গডের’ অস্তিত্ব ধীরে ধীরে মুছে যাবে।
'হ্যান্ড অফ গড’-এর চৌম্বক শক্তি পৃথিবীর চৌম্বক শক্তির তুলনায় প্রায় ১৫ ট্রিলিয়ন গুন বেশি সম্পূর্ণ নীহারিকাটি (ত্রত্ন) ঘূর্ণন অবস্থাতে আছে। প্রতি সেকেন্ডে নিজের চারপাশে সাত -বার পাক খাচ্ছে।এর পাশ দিয়ে কোনাে বস্তু গেলে সেটি এর তীব্র চৌম্বকীয় আকর্ষণের প্রভাবে সম্পূর্ণরূপে বিলীন হয়ে যাবে। এই কারণেই একে ‘ব্ল্যাক হােল নেবুলা’ নামেও অভিহিত করা হচ্ছে।
‘ঈশ্বরের হাত’ নিয়ে নেট দুনিয়া রীতিমতাে সরগরম। সেখানে বিভিন্ন ধরণের ব্যাখ্যা উঠে আসছে। কেউ বলছেন, করােনা প্যান্ডেমিক এবার শেষ হবে। ঈশ্বর পৃথিবীর মাথার উপর তাঁর বরাভয়ের হাত রেখেছেন, সব অকল্যাণ ঘুচে গিয়ে পৃথিবীতে শান্তি নেমে আসবে।
আবার কোনাে কোনাে পােস্ট বলছে, এটি আসলে ‘হ্যান্ড অফ মিডাস'। ছােটবেলায় গল্পের বইয়ে পড়া কিং মিডাস যার হাতের যাদুছোঁয়ায় সবকিছু সােনা হয়ে যেত, ঠিক একইভাবে ঈশ্বরের সােনার।হাতের পরশ পৃথিবীবাসীর।জন্য শীঘ্রই শুভকামনা বয়ে নিয়ে আসবে।
কেউ আবার কমেন্টে লিখেছে, মহাদেবের তৃতীয় নয়ন থেকে আগুন ঠিকরে বেরােচ্ছে,পাশে ভগবান শিবের জটা যেখান থেকে গঙ্গা নদীর সৃষ্টি হয়েছিল। বিশ্বাস হল ভগবান তাঁর রুদ্র রােষানলে অনিষ্টকারক সবকিছু ছারখার করে দিয়ে বিশ্বজুড়ে শান্তিসুধা বইয়ে দেবে।নেটিজেনরা তাঁদের আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে এই মহা- জাগতিক বিস্ফোরণকে নিজের মতাে করে ব্যাখ্যা করেছেন।
বিশাল সৌরজগতের অতি ক্ষুদ্র এক অংশ হল পৃথিবী। ব্রহ্মাণ্ডলােকে সূর্য ও পৃথিবীকে ঘিরে আবর্তিত গ্রহনক্ষত্র ছাড়া আরও বিস্তীর্ণ অঞ্চল রয়েছে, যার বেশিরভাগটাই অজানা। সেখানকারই এক নীহারিকা হল ‘ঈশ্বরের হাত।
মহাকাশ বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ১৭০০ বছর ধরে মহাকাশেই অবস্থান করছিল ঈশ্বরের হাত’, এখন তার ফুরিয়ে যাওয়ার পালা। তবে তাঁদের বিশ্বাস পুরােপুরি বিলীন হয়ে যেতে আরও কয়েকশাে বছর দেরি।
কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক-গবেষক হংজুন অ্যান-এর গলায় অবশ্য একটু দ্বিধার সুর। তিনি জানিয়েছেন, আমরা এখনও জানিনা ‘হ্যান্ড অফ গড’ আসলে কোনও গ্রহ-নক্ষত্রের সমন্বয় নাকি উচ্চশক্তি সম্পন্ন এক্স-রে নির্গমনের ফলে সৃষ্ট দৃষ্টিবিভ্রম! তবে এর অভিনব আকৃতি আমাদের কৌতুহল বাড়িয়ে দিয়েছে’
নাসাও এখনও এই নেবুলা বা নীহারিকার ব্যাপারে সম্পূর্ণ তথ্য দিয়ে উঠতে পারেনি। তবে সারা বিশ্বের বিজ্ঞানীরা এই রহস্য উদ্ঘাটনে উঠে পড়ে লেগেছেন।
বিজ্ঞানীদের প্রজ্ঞার ওপর ভরসা করে বলা যায় ‘ঈশ্বরের হাতে’র মহারহস্য ফাঁস হওয়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
‘ঈশ্বরের হাত’ নিয়ে নেট দুনিয়া রীতিমতাে সরগরম। সেখানে বিভিন্ন ধরণের ব্যাখ্যা উঠে আসছে। কেউ বলছেন, করােনা প্যান্ডেমিক এবার শেষ হবে। ঈশ্বর পৃথিবীর মাথার উপর তাঁর বরাভয়ের হাত রেখেছেন, সব অকল্যাণ ঘুচে গিয়ে পৃথিবীতে শান্তি নেমে আসবে।
আবার কোনাে কোনাে পােস্ট বলছে, এটি আসলে ‘হ্যান্ড অফ মিডাস'। ছােটবেলায় গল্পের বইয়ে পড়া কিং মিডাস যার হাতের যাদুছোঁয়ায় সবকিছু সােনা হয়ে যেত, ঠিক একইভাবে ঈশ্বরের সােনার।হাতের পরশ পৃথিবীবাসীর।জন্য শীঘ্রই শুভকামনা বয়ে নিয়ে আসবে।
কেউ আবার কমেন্টে লিখেছে, মহাদেবের তৃতীয় নয়ন থেকে আগুন ঠিকরে বেরােচ্ছে,পাশে ভগবান শিবের জটা যেখান থেকে গঙ্গা নদীর সৃষ্টি হয়েছিল। বিশ্বাস হল ভগবান তাঁর রুদ্র রােষানলে অনিষ্টকারক সবকিছু ছারখার করে দিয়ে বিশ্বজুড়ে শান্তিসুধা বইয়ে দেবে।নেটিজেনরা তাঁদের আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে এই মহা- জাগতিক বিস্ফোরণকে নিজের মতাে করে ব্যাখ্যা করেছেন।
বিশাল সৌরজগতের অতি ক্ষুদ্র এক অংশ হল পৃথিবী। ব্রহ্মাণ্ডলােকে সূর্য ও পৃথিবীকে ঘিরে আবর্তিত গ্রহনক্ষত্র ছাড়া আরও বিস্তীর্ণ অঞ্চল রয়েছে, যার বেশিরভাগটাই অজানা। সেখানকারই এক নীহারিকা হল ‘ঈশ্বরের হাত।
মহাকাশ বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, ১৭০০ বছর ধরে মহাকাশেই অবস্থান করছিল ঈশ্বরের হাত’, এখন তার ফুরিয়ে যাওয়ার পালা। তবে তাঁদের বিশ্বাস পুরােপুরি বিলীন হয়ে যেতে আরও কয়েকশাে বছর দেরি।
কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক-গবেষক হংজুন অ্যান-এর গলায় অবশ্য একটু দ্বিধার সুর। তিনি জানিয়েছেন, আমরা এখনও জানিনা ‘হ্যান্ড অফ গড’ আসলে কোনও গ্রহ-নক্ষত্রের সমন্বয় নাকি উচ্চশক্তি সম্পন্ন এক্স-রে নির্গমনের ফলে সৃষ্ট দৃষ্টিবিভ্রম! তবে এর অভিনব আকৃতি আমাদের কৌতুহল বাড়িয়ে দিয়েছে’
নাসাও এখনও এই নেবুলা বা নীহারিকার ব্যাপারে সম্পূর্ণ তথ্য দিয়ে উঠতে পারেনি। তবে সারা বিশ্বের বিজ্ঞানীরা এই রহস্য উদ্ঘাটনে উঠে পড়ে লেগেছেন।
বিজ্ঞানীদের প্রজ্ঞার ওপর ভরসা করে বলা যায় ‘ঈশ্বরের হাতে’র মহারহস্য ফাঁস হওয়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.