![]() |
দুলেরা বিবি ও তার অসুস্থ স্বামী |
মালদা: স্বামী ক্যানসার আক্রান্ত। অর্থাভাবে হচ্ছে না স্বামীর চিকিৎসা। তৃণমূল নেতাদের জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। চিকিৎসার জন্য শেষ সম্বল জমিটুকু বিক্রি করে দিয়েও সম্পূর্ণ টাকার জোগাড় হয়নি? এমনকি মেলেনি স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সুফল। অবশেষে স্বামীকে বাঁচাতে অর্থ সাহায্যের জন্য দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বেরাচ্ছেন স্ত্রী। ওই পরিবারের পাশে দাঁড়ানাের আশ্বাস দিয়েছেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। পাল্টা স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।
পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ক্যানসার রােগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় এক বছর ধরে চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন চাঁচল মহকুমার হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের কতােল গ্রামের বাসিন্দা সাবিরুল ইসলাম (৫০)।
শেষ সম্বল ছয় কাঠা জমি বিক্রি করেও চিকিৎসার খরচ জোগাড় করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি ওই পরিবারের। তাই স্বামীকে বাঁচানাের আপ্রাণ চেষ্টায় আর্থিক সাহায্যের জন্য দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন স্ত্রী দুলেরা বিবি। এলাকার তৃণমূল নেতাদের দরবার করেও মিলেনি কোনাে সাহায্য বলে আক্ষেপ পরিবারের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাবিরুল ইসলাম প্রায় এক বছর ধরে লিভার ক্যানসার রােগে আক্রান্ত। চিকিৎসার জন্য কলকাতা ও বেঙ্গালুরু নিয়ে গেলেও দ্রুত অপারেশন করার কথা জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু অপারেশন করতে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা খরচ হবে। কোথায় পাবে এত টাকা? দুশ্চিন্তায় পড়েছে পরিবার। প্রতিদিনই তাঁর কিছু প্রযোজনীয় ওষুধ লাগে। কিন্তু আর্থিক অভাবের জন্য সেই ওষুধ জোগাড় করতে না পেরে সমস্যায় রয়েছেন দুলেরা বিবির পরিবার। ওষুধের অভাবে দিনের পর দিন কষ্ট বাড়ছে বছর পঞ্চাশের ওই ব্যক্তির।
ক্যানসার আক্রান্ত সাবিরুল ইসলাম বলেন, এক বছর ধরে লিভার ক্যানসারে ভুগছি। জমি বিক্রি করে বেঙ্গালুরু -তে চিকিৎসা করিয়েছি। এরপর স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিয়ে কলকাতা চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে গেলে চিকিৎসা হবে না বলে জানিয়েছে দিয়েছে। মালদা, রায়গঞ্জ, বিহারের কাঠিহার সহ বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করতে অনেক খরচ হয়েছে। সরকারি কোনও সাহায্য পাচ্ছি না। আর চিকিৎসা করার ক্ষমতা নেই। খুবই খারাপ অবস্থা।
স্ত্রী দুলেরা বিবি জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিয়ে কলকাতা চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে গেলেও সেই কার্ড দেখিয়ে কোনাে চিকিৎসা করানো যায়নি। দরিদ্র পরিবার, কোনও ভাবে দুবেলা দুমুঠো খেয়ে চলছে। কোনও রকম সরকারি সাহায্যও পায়নি। এখন সমস্যায় পড়েছি স্বামীর অপারেশনের খরচ জোগাড় করতে। আবার প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকার ঔষধের দরকার। তাই এত টাকা জোগাড় করতেই এখন মানুষের দুয়ারে দুয়ারে অর্থ সাহায্যের জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছি।
হরিশ্চন্দ্রপুরের বিজেপি নেতা রূপেশ আগারওয়াল কটাক্ষের সুরে বলেন, স্বাস্থ্য সাথী কার্ড ভাঁওতাবাজি। ভােটের জন্য ভাঁওতা ছিল। এই সরকারের সবকিছু ভাঁওতা। এই দুর্নীতি কাটমানির সরকার বেশিদিন চলবে না। মানুষ এর জবাব দেবে।
হরিশ্চন্দ্রপুর ১ বিডিও অনির্বাণ বসু বলেন, ওই পরিবার- টির সঙ্গে যােগাযােগ করে সমস্ত ঘটনার কথা শােনা হবে। ওই পরিবারটি যাতে চিকিৎসা পায় সে ব্যাপারেও সব রকম ভাবে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.