হুগলি: উচ্চ শিক্ষা দফতরের নির্দেশ ছাড়া কোনাে রকম অস্থায়ী কর্মী নিয়ােগ করার নির্দেশ না থাকলেও সেই নির্দেশা-বলিকে উপেক্ষা করে হুগলি জেলার খানাকুলের রাজা রামমােহন রায় মহাবিদ্যালয়ের বিভিন্ন অস্থায়ী পদে নিয়ােগ প্রক্রিয়ার কাজ শুরু করার খবরে মহকুমাজুড়ে যথারীতি চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে ।
এই ঘটনা জানাজানি হতেই বিক্ষোভে ফেটে পড়ে চাকরি প্রার্থীরা। অবশেষে নিয়ােগ প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ জারি করল কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজের এই নিয়ােগ প্রক্রিয়ায় কেন শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের নাম জড়িয়ে পড়ে?
জানা গেছে কলেজ পরিচালন সমিতির সঙ্গে আলােচনা করে শাসক দলের বিশেষ করে আরামবাগের সাংসদ অপরূপা পােদ্দারের ঘনিষ্ঠ নেতা ও কর্মীদের নাকি বেছে বেছে ইন্টার-ভিউয়ের জন্য ডাকা হয়েছে বলে অভিযোগ।
এই ঘটনা জানাজানি হতেই সাধারণ চাকরি প্রার্থীরা কলেজের মধ্যে বিক্ষোভ ও অবস্থান বিক্ষোভ দেখায়। তাদের দাবি, এই নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ রাজা রামমােহন রায় মহাবিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল।
বিষয়টি সামনে আসতেই অস্বস্তিতে পড়ে যায় কলেজ কর্তৃপক্ষ। অভিযােগ শিক্ষাদফতরকে অন্ধকারে রেখে কলেজ পরিচালন কমিটি গােপনে এই নিয়ােগ করতে চলেছে, তাই সােমবার দুপুরে কলেজের সামনে চাকরি প্রার্থীরা অবস্থান বিক্ষোভে নামেন।
এই বিষয়ে বিক্ষোভকারীদের দাবি, নিয়ােগের জন্য শতাধিক ফর্ম জমা নেওয়া হলেও কাউকে কিছু না জানিয়ে সকলের অজান্তেই নিয়ােগ করতে চলেছে কলেজ পরিচালন সমিতি।
এদিন বিক্ষোভকারীরা অভিযােগ তুলেছেন শাসকদলের নেতাদের ঘনিষ্ঠ, প্রধানত আরামবাগ সাংসদ তথা কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি অপরূপা পােদ্দারের অনুগামী-দের অবৈধভাবে নিয়ােগ করে দেওয়া হচ্ছে।
বিক্ষোভকারীদের হাতে যে প্লাকার্ড ছিল, তাতে বড় বড় করে লেখা রয়েছে, অপরূপা পােদ্দার রামমােহন কলেজে যাদের নিয়ােগ করছেন তারা হল, অপরূপা পােদ্দারের পি.এ চিন্ময় সামন্তের স্ত্রী, অপরূপা পােদ্দারের আত্মীয়ের স্বামী, ঘােষপুর পঞ্চায়েতের প্রধান হায়দার আলির স্ত্রী - সুমাইয়া খাতুন, কলেজের হেড ক্লার্ক বিশ্বজিৎ মুখার্জির (CPM এর হার্মাদ) মেয়ে শ্বেতা মুখার্জি।
এই বিষয়ে নিবেদিতা সাউ দাবি করেন, আমরা আবেদন করেছিলাম কিন্তু সাধারণ প্রার্থীদের কাউকে ডাকা হয়নি। কেবলমাত্র চারজনকে ডাকা হয়েছে, তাই আমরা আন্দোলন শুরু করি।
অবশেষে কলেজ কর্তৃপক্ষ আবার নােটিস দিয়ে কর্মী নিয়ােগ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখে । একদিকে স্বজনপােষণের অভিযােগ আর অন্যদিকে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্যের জোড়া চাপে রীতিমতাে অস্বস্তিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
ঘটনাপ্রসঙ্গে রামমােহন মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ দীপক ভার্গবের এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে আরামবাগ বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিমান ঘােষ বলেন রাজা রামমােহন কলেজে বেআইনিভাবে নিয়ােগ করতে চেয়েছিল এখানকার সাংসদ অপরূপা পোদ্দার। তাই স্বগিত করতে বাধ্য হয়েছে। আমরা স্বচ্ছভাবে নিয়ােগের ব্যবস্থা করবাে।
সাংসদ অপরূপা পােদ্দার জানান, আমি উচ্চ প্রশাসনে জানিয়েছি। স্বচ্ছ ভাবেই নিয়ােগ হবে। ভাবমূর্তি খারাপ করার জন্য একজন প্রাক্তন বিধায়ক এতে যুক্ত। এ বিষয়ে আমি দলকে জানাব।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.