চোরাপথে বাংলাদেশ ও মায়ানমার থেকে রোহিঙ্গা মহিলাদের পাচার করা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্ত লাগোয়া গাইঘাটা ও হাবড়া-কে করিডর হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের দেশে ঢুকিয়ে জঙ্গি সংগঠনের স্লিপার সেলের সদস্যদের সঙ্গে তাদের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বাড়ানো হচ্ছে পরিবার। উদ্দেশ্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম-কে জেহাদি তৈরি করা।
নাশকতার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে জেহাদিরা ধীরে ধীরে দেশের অভ্যন্তরে শাখা বিস্তার করে চলেছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ (NIA)-র বয়ানে উঠে এল এমনই বিস্ফোরক তথ্য। দেশের অভ্যন্তরে ইতিমধ্যে আস্তানা গেড়ে ফেলেছে বেশকিছু রোহিঙ্গা মহিলা। তারাই আবার বাংলাদেশ ও মায়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গাদের ঠাঁই দিতে আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। জেহাদের উদ্দেশ্যে এদেশে নিয়ে আসা রোহিঙ্গারা এদেশে আত্মীয়ের পরিচয় দিয়ে সহজেই বাড়িতে আশ্রয় নিতে পারছে।
সুপারিশ সূত্রে ওই রোহিঙ্গারা বাড়ি ভাড়াও পেয়ে যাচ্ছে। তদন্তে নেমে এনআইএ (NIA) জানতে পেরেছে, বাংলাদেশ ও মায়ানমার থেকে আনা রোহিঙ্গাদের পাচারে জেহাদিদের ভরসা তপতী নামে জনৈক মহিলা। বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইতিমধ্যে তিনজনকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা পাকড়াও করেছে। তবে তপতীর নাগাল এখনও পাওয়া যায়নি।
এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, পাকিস্তান থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে দেশের রোহিঙ্গাদের। জাল পাসপোর্ট ও ভুয়ো নথিপত্র দিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তারা বসবাস করছে। কিছুদিন আগে কাশ্মীর থেকে জাহিরুদ্দিন নামে এক রোহিঙ্গা যুবককে গ্রেফতার করা হয়। তল্লাশি -তে তার কাছ থেকে বেশ কিছু জাল নথি ও পরিচয়পত্র উদ্ধার হয়। তদন্তে নেমে এনআইএ জানতে পারে যে, মূলত মায়ানমার ও বাংলাদেশ হয়ে চোরাপথে রোহিঙ্গাদের পাচার করা হচ্ছে। তাদের দেশের বিভিন্ন রাজ্যে আশ্রয়ও দেওয়া হচ্ছে। কিছুদিন পরে তাদের বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনে নিয়োগ করা হচ্ছে। পাকিস্তানে বসে জঙ্গি সংগঠনের মাথারা ছক কষছেন, রোহিঙ্গাদের দিয়ে কীভাবে দেশের অভ্যন্তরে হামলা চালানো যায়। গোপন ডেরায় তাদের অস্ত্র ও বিস্ফোরকের প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে। জেহাদি ভাষণ দেওয়ার জন্য। টেরর সেল তৈরি করা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, অসম, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু ও রাজস্থান-সহ দেশের ১০টি রাজ্যের ৫৪টি জায়গায়। রোহিঙ্গা জেহাদিরা সক্রিয়া বলে এনআইএ জানতে পেরেছে।
সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদর বারাসত, হাবড়া ও গাইঘাটায় তল্লাশি চালিয়ে এনআইএ আধিকারিকরা তিনজনকে গ্রেফতার করেছেন। ধৃতদের নাম সঞ্জীব দেব, বিকাশ সরকার ও রাজু রুদ্র। সঞ্জীব ভারতেই থাকে। বিকাশ ঢাকার বাসিন্দা। রাজুর বাড়িও বাংলাদেশে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন,ধৃতদের প্রত্যেকের সঙ্গে বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠনের যোগাযোগ রয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam link in the comment box.